RTI, 2009 Bangladesh

"তথ্য অধিকার আইন" বাংলাদেশে একটা নতুন আইন যা ২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। আর এই আইন বাস্তবায়নের এর জন্য তথ্য কমিশন নামে একটি স্বাধীন কমিশন গঠিত হয়েছে।
এই আইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন কমিশনের অয়েবসাইট, http://www.infocom.gov.bd/
তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত বিধান করিবার লক্ষ্যে প্রণীন আইন
যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকতৃ এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার চিমত্মা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতার
একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ; এবং
যেহেতু জনগণ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক ও জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক; এবং
যেহেতু জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা হইলে সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারী ও বিদেশী অর্থায়নে সৃষ্ট বা পরিচালিত বেসরকারী সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাইবে, দুর্নীতি হ্রাস পাইবে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হইবে; এবং
যেহেতু সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারী ও বিদেশী অর্থায়নে সৃষ্ট বা পরিচালিত বেসরকারী সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ

প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন।-(১) এই আইন তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে। (২) এই আইনের -
(ক) ধারা ৮, ২৪ এবং ২৫ ব্যতিত অন্যান্য ধারা ২০ অক্টোবর, ২০০৮ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
(খ) ৮, ২৪ এবং ২৫ ধারা ১লা জুলাই, ২০০৯ তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।

২। সংজ্ঞা ।-বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হইলে, এই আইনে -
(ক) ‘‘আপীল কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ -
(অ) কোন তথ্য প্রদান ইউনিটের ক্ষেত্রে উক্ত ইউনিটের অব্যবহিত ঊর্ধ্বতন
কার্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান; অথবা
(আ) কোন তথ্য প্রদান ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কার্যালয় না থাকিলে, উক্ত তথ্য প্রদান
ইউনিটের প্রশাসনিক প্রধান;
(খ) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ -
(অ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সৃষ্ট কোন সংস্থা;
(আ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত কার্য
বিধিমালার অধীন গঠিত সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়;
(ই) কোন আইন দ্বারা বা উহার অধীন গঠিত কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(ঈ) সরকারী অর্থায়নে পরিচালিত বা সরকারী তহবিল হইতে সাহায্যপুষ্ট কোন
বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(উ) বিদেশী সাহায্যপুষ্ট কোন বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(ঊ) সরকারের পক্ষে অথবা সরকার বা সরকারী কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সহিত
সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সরকারী কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন
বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান; বা
(ঋ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(গ) ‘‘কর্মকর্তা’’ অর্থে কর্মচারীও অমত্মর্ভুক্ত হইবে;
(ঘ) ‘‘তথ্য প্রদান ইউনিট’’ অর্থ -
(অ) সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়ের সহিত সংযুক্ত বা অধীনস্থ কোন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা কার্যালয় বা উপজেলা কার্যালয়;
(আ) কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা
কার্যালয় বা উপজেলা কার্যালয়;

(ঙ) ‘‘তথ্য কমিশন’’ অর্থ ধারা ১১ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত তথ্য কমিশন;
(চ) ‘‘তথ্য’’ অর্থে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকান্ড সংক্রান্ত যে কোন স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগ বহি, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রসত্মাব, আলোকচিত্র, অডিও, ভিডিও, অংকিতচিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্ত্ততকৃত যে কোন ইনস্ট্রুমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যে কোন তথ্যবহ বস্ত্ত বা উহাদের প্রতিলিপিও ইহার অমত্মর্ভুক্ত হইবেঃ তবে শর্ত থাকে যে, দাপ্তরিক নোট সিট বা নোট সিটের প্রতিলিপি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
(ছ) ‘‘তথ্য অধিকার’’ অর্থ কোন কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে তথ্য প্রাপ্তির অধিকার;
(জ) ‘‘তফসিল’’ অর্থ এই আইনের তফসিল;
(ঝ) ‘‘তৃতীয় পক্ষ’’ অর্থ তথ্য প্রাপ্তির জন্য অনুরোধকারী বা তথ্য প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অনুরোধকৃত তথ্যের সহিত জড়িত অন্য কোন পক্ষ;
(ঞ) ‘‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা’’ অর্থ ধারা ১০ এর অধীন নিযুক্ত কর্মকর্তা;
(ট) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
(ঠ) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ ধারা ৩৪ এর অধীন প্রণীত কোন প্রবিধান;
(ড) ‘‘বাছাই কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৪ এর অধীন গঠিত বাছাই কমিটি;
(ঢ) ‘‘বিধি’’ অর্থ ধারা ৩৩ এর অধীন প্রণীত কোন বিধি।


৩। আইনের প্রাধান্য। -প্রচলিত অন্য কোন আইনের -
(ক) তথ্য প্রদান সংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের বিধানাবলী দ্বারা ক্ষুণ্ন হইবে না; এবং
(খ) তথ্য প্রদানে বাধা সংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সাংঘর্ষিক হইলে, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।


তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- জনগণের ক্ষমতায়ন এবং জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য প্রতিটি সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, সরকারি বা বিদেশী অর্থ সাহায্যপুষ্ট বেসরকারি সংস্থাসহ সরকারী কর্মকান্ড পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্নীতিহ্রাস এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
আর দেশের জনগণ যাতে তথ্যসমৃদ্ধ হয়ে এ সকল প্রতিষ্ঠানের ওপর নজর রাখতে পারে এবং এ সকল প্রতিষ্ঠান যেন তাঁদের নিকট দায়বদ্ধ থাকে, তার ব্যবস্থাগ্রহণ করা। তথ্য অধিকার আইনটির সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণ এ অধিকার পাবেন বলে তথ্য কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।
উল্লেখ্য যে, প্রচলিত অন্য কোন আইনের তথ্যপ্রদানসংক্রান্ত বিধানাবলী এ আইনের বিধানাবলী দ্বারা ক্ষুণ্ণ হবে না এবং তথ্যপ্রদানে বাধাসংক্রান্ত বিধানাবলী এ আইনের বিধানাবলীর সাথে সাংঘর্ষিক হলে, এ আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাবে।(তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯- ধারা-৩)।

কিভাবে তথ্য চাইবেন 
তথ্য অধিকার আইন,২০০৯ মোতাবেক নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক বাংলাদেশের নাগরিক যে কোন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কাঙ্খিত তথ্য পেতে পারেন। 
এই আইনের আওতায় যে কোন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের/ কার্যালয়ে তথ্য পেতে আপনাকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের/কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
আবেদনকারীকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট নির্দিষ্ট নমুনায়/ফরমেটে আবেদনপত্র সরাসরি/ই-মেইলে আবেদন করতে হবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবেদন পাওয়ার পর ২০ (বিশ) দিনের মধ্যে ক্ষেত্র বিশেষে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সফ্ট/ই-মেইল/প্রিন্টেড কপি/ফটোকপি/সিডি কপি তথ্য প্রদান করবেন।
কোন কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রদানে অপারগ হলে, আবেদনকারীকে নির্ধারিত পদ্ধতি/ফরমেট অনুসরণপূর্বক ১০ (দশ) দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অবহিত করবেন।
আবেদনকারী তথ্য না পেলে বা কোন প্রকার সংক্ষুব্ধ হলে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের (নির্ধারীত নমুনা/ফরমে) নিকট আপিল করতে পারবেন। 
আপীল কর্তৃপক্ষ আবেদন পাওয়ার ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে আপীল নিষ্পত্তি করবেন। 
আপীল করার পরেও যদি তথ্য না পাওয়া যায় তাহলে তথ্য কমিশনে অভিযোগ করতে হবে।

ডাউনলোড লিঙ্কঃ 
১। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (বাংলা)English
২। তথ্য প্রাপ্তির আবেদন পত্র
৩। অপারগতার নটিশ
৪। আপীল আবেদনপত্র
৫। অভিযোগ পত্র





No comments:

Post a Comment